১। মাটি তৈরীঃ
নরমাল গার্ডেন সয়েল (উর্বর দোআঁশ) ৪০%
ককোপিটঃ ১০%
নিম খৈলঃ ১০%
ভার্মি কম্পোস্টঃ ১০%
গোবরঃ ১০%
সাদা বালি মাটিঃ১০%
হাড়ের গুড়াঃ ৪ চা চামচ
শিং কুচিঃ ২ চা চামচ
পটাশঃ ১/২ চা চামচ
সবগুলো উপকরণ একত্রে মিশিয়ে ১৫ থেকে ৩০দিন রেখে দিতে হবে এবং মাঝেমাঝে পানি দিয়ে মাটি উলটে
পালটে দিতে হবে। এটি মাটি ভালো করতে সহায়তা করে।
টব নির্বাচনঃ গাছের সাইজ অনুযায়ী টব নির্বাচন করতে হবে, বড় জাতের গোলাপ গাছের জন্য বড় টব আর
ছোট জাতের চারার জন্য ছোট টব নিতে হবে। টবের সাইজ কমপক্ষে ১২ ইঞ্চি হতে হবে। টবে একের অধিক
ছিদ্র থাকা ভালো।
২।টবে প্রতিস্থাপনঃ
গোলাপের চারা রোপনের উপযুক্ত সময় হলো অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারী মাস। শীতকালে গাছের রোগ বালাই
ও পোকার আক্রমণ কম হওয়ায় খুব অল্প যত্নেই গাছ ভালোভাবে বেড়ে ওঠে। এছাড়াও এই সময় চারা
লাগালে দ্রুত বেড়ে উঠে এবং দীর্ঘসময় ফুল পাওয়া যায়।
টবে যাতে পানি জমে না থাকে সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে। টবের নীচে কিছু ভাঙা খোলা বা ইটের খোয়া দিয়ে
দিলে টবের ছিদ্র মাটি দিয়ে বন্ধ হবে না এবং পানি জমে থাকবে না। এর উপর লাল বালির স্তর করে দিতে
হবে। এরপর রেডি করে রাখা মাটি দিয়ে দিতে হবে। টবের আকার অনুযায়ী যতটুকু প্রয়োজন মাটি দিয়ে তার
উপর গোলাপের চারা বসিয়ে দিতে হবে। সবশেষে আবার ও মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। ভালো করে হাত দিয়ে
চেপে মাটি দিতে হবে যাতে বাতাস বেশী না থাকে। চারা রোপন শেষে পানি দিয়ে দিয়ে হবে। গোলাপ গাছে ঝাঁঝরি
দিয়ে সমস্ত গাছ ডালপালাসহ ভিজিয়ে পানি দেওয়া সবচেয়ে ভালো।
রোদঃ গোলাপ গাছের জন্য সকালের ৭-৮ ঘন্টা রোদ প্রয়োজন। চারদিক থেকে রোদ পায় এমন স্থানে গাছ
রাখলে গাছ সবদিকে সমানভাবে বাড়ে ।যদি গাছের একদিকে রোদ লাগে তাহলে মাঝেমাঝে টব রোদের দিকে
ঘুরিয়ে দিতে হবে।
চারা অবস্থায় গাছকে প্রখর রোদে না রাখাই ভালো,সকালের ২-৩ ঘন্টা রোদই যথেষ্ট।
৩। সার ও কীটনাশক প্রয়োগঃ
শীতকালের তুলনায় গরমকালে/বর্ষাকালে গোলাপ গাছের রোগ বালাই বেশী হয়। গরমকালে গাছে দিনে ১বার
পানি স্প্রে করে সম্পূর্ণ গাছকে ধুয়ে দিলে রোগ বালাই কম হয়। লাল মাকড়ের আক্রমণ এসময় বেশী হয়।
সপ্তাহে একবার মাকড় নাশক স্প্রে করলে গাছ মাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়।
গোলাপ গাছকে ছত্রাকের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য ১৫দিন পরপর বিকালে ছত্রাক নাশক স্প্রে
করতে হবে।
৪।গাছ ছাটাই/প্রুনিংঃ
অক্টোবর-নভেম্বর মাস প্রুনিং্যের উপযুক্ত সময়। ৭-১০ ইঞ্চি বড় ডাল রেখে গাছ ছেটে দিতে হয়।
গ্রাফটেড গাছে জংলি ডাল জন্মায় সেগুলো কেটে ফেলতে হবে।গাছ ছাটাইয়ের পর ছাটাইকৃত অংশে ডাইব্যাক
রোগের আক্রমণ হতে পারে। এ সমস্যার সমাধানের জন্য, গাছের ডাল কাটার জন্য ধারালো ছুড়ি/কাটার
ব্যবহার করতে হবে। কাটা অংশে ফাংগিসাইড অথবা হলুদের গুড়া লাগাতে হবে।
নিয়মিত গাছের গোড়ার ঘাস তুলে ফেলে পরিষ্কার করতে হবে,শুকনো ফুল/ডাল কেটে ফেলতে হবে।
মেডিসিন ও সার ব্যবহারে সতর্কতাঃ
বর্ষাকালে গোলাপ গাছে তরল সার ব্যবহার না করাই ভালো।
মেডিসিন রোদের সময় এবং গাছ ভেজা অবস্থায় স্প্রে করা যাবে না।
গাছের সঠিক রোগ নির্ণয় ও সঠিক পরিমাণে ওষুধ ব্যবহার করা।